শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৪:২৫ অপরাহ্ন

‘আদালত নিরপেক্ষ হলে শোভন-রাব্বানীর ব্যবস্থা নিত’

‘আদালত নিরপেক্ষ হলে শোভন-রাব্বানীর ব্যবস্থা নিত’

স্বদেশ ডেস্ক:

ছাত্রদলের কাউন্সিল ও কমিটি গঠন আইনসিদ্ধ দাবি করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘আদালত যদি নিরপেক্ষ ও স্বাধীন হতো তাহলে আরপিও ভঙ্গ এবং দস্যুবৃত্তিক কর্মকাণ্ড আমলে নিয়ে ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি বিলুপ্তি করে দিত এবং আওয়ামী লীগ হাইকমান্ডকে শোকজ করত।’

আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, ‘আদালত যদি নিরপেক্ষ ও স্বাধীন হতো তাহলে মিডনাইট ভোট ডাকাতি করার পর অবৈধ নির্বাচন ও ভূয়া সরকারকে বাতিল ঘোষণা করতো। শোভন-রাব্বানীর ৮৬ কোটি টাকার চাঁদাবাজির ঘটনায় ব্যবস্থা নিত। ৬০ ক্যাসিনোর বিরুদ্ধে আদেশ দিত। ব্যাংক ডাকাত, শেয়ার বাজার লুটেরাগণ আদালতের নজরে আসত। বাংলাদেশকে ফোকলা করে এই সরকারের যারা হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিত। কিন্তু তা না করে আদালত পড়ে আছে বিএনপিকে নিয়ে।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বারবার গণতান্ত্রিক পথে হাঁটতে চেয়েছি, কিন্তু সরকার নিজেরাও গণতন্ত্রের চর্চা করছে না, আমাদেরকেও করতে দিচ্ছে না। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সম্মেলন এবং নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল ১৪ সেপ্টেম্বর। ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা সেভাবে প্রস্তুতিও নিয়েছিল। কিন্তু গত ১২ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার অফিস টাইম শেষ হওয়ার পূর্বমুহূর্তে তড়িঘড়ি করে আদালতের রায়ের দোহাই দিয়ে ছাত্রদলের কাউন্সিলকে বানচাল করার জন্য ১২ জন সাবেক ছাত্র নেতার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে সরকার।’

ছাত্রদলের কাউন্সিল প্রসঙ্গে রিজভী আরও বলেন, ‘আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি, ক্ষমতার অপব্যাবহার করে আদালত রায়ের নামে এমনভাবে ক্ষমতাসীনদের ইচ্ছা বাস্তবায়ন করলেন, যাতে ছাত্রদল আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে যাওয়ার সুযোগ না পায়। এই রায়ের আসল উদ্দেশ্য ছিল যাতে ছাত্রদলের কাউন্সিলকে বানচাল করা।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, একটি রাষ্ট্রে যখন ক্ষমতাসীনরা স্বৈরাচারী আচরণ করে, দুর্বৃত্তপরায়ণ হয়ে ওঠে, এমন পরিস্থিতিতে গণতন্ত্রকামী মানুষের শেষ আশ্রয় আদালত। কিন্তু জনগণ উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছে, এখন আদালত যেন হয়ে উঠেছে ক্ষমতাসীনদের অশুভ ইচ্ছা বাস্তবায়নের হাতিয়ার। রাজনৈতিক দলের অভ্যন্তরীণ কার্যক্রমে আদালত হস্তক্ষেপ করতে পারে না।

তিনি আরো বলেন, ছাত্রলীগের কমিটি গঠন, শোকজ নোটিশ ছাড়া তাদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে বাদ দেয়া আবার দুই জনকে ভারপ্রাপ্ত হিসাবে দায়িত্ব প্রদান সব কিছু অবৈধ। অথচ আদালত এসব নিয়ে নিশ্চুপ।

ছাত্রদল নিজেরা এখন পর্যন্ত যা কিছু করেছে, তার সবই আইনসম্মত দাবি করে এ বিএনপি নেতা বলেন, ‘কাউন্সিলারদের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত এই কমিটি। এটা রাতের আঁধারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে নব্যবাকশালীদের ভোট ডাকাতি করে সরকার গঠনের মতো অবৈধ কিছু নয়। আইনের বিধানে, রাজনৈতিক দল বা তাদের কর্মকান্ড সংশ্লিষ্ট কোনো বিষয় আদালতের এখতিয়ারে পড়ে না, এমন একাধিক বার উচ্চ আদালতের রায় রয়েছে।’

রিজভী বলেন,‘আপনাদের নিশ্চয়ই স্মরণে আছে, ওয়ান ইলেভেনের তথাকথিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে বিএনপির মহাসচিব পদ নিয়ে তারা কোর্টে গিয়েছিল। কোর্ট ওই সময়ে পরিষ্কার বলে দিয়েছিল যে, কোনো রাজনৈতিক দলের ব্যাপারে আদালত হস্তক্ষেপ করতে পারে না, সেই এখতিয়ার আদালতের থাকা উচিত নয়। এটা ছিল তখন আদালতের পর্যবেক্ষণ। আমরা অতীতে কখনো দেখিনি রাজনৈতিক দলের কার্যক্রমে আদালত যুক্ত হচ্ছে বা হস্তক্ষেপ করছে।’

গতকাল সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের ওপর ছাত্রলীগের হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাসের নেতৃত্বে ৩০-৪০ জন জঙ্গি সন্ত্রাসী নেতাকর্মী লাঠি, রড ও ইট নিয়ে ছাত্রদলের নেতাকর্মী ও সাংবাদিকদের উপর বর্বরোচিত হামলা চালিয়েছে। মোবাইল ছিনতাই করেছে। এই নারকীয় জঙ্গি হামলায় ছাত্রদলের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী গুরুতর আহত হয়েছেন।’

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877